গরমে শুধু ত্বকই নয়, মনও যেন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বাইরে সূর্যের প্রখরতা, ভেতরে ক্লান্তির ছাপ—সব মিলিয়ে একটা অসহ্য অনুভূতি তৈরি হয়। এই সময়ে ত্বক যেমন শুষ্ক হয়ে যায়, তেমনই অতিরিক্ত ঘাম, ব্রণ, আর চুল পড়ার মতো সমস্যাও হঠাৎ বেড়ে যায়। কিন্তু একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না—আপনার ত্বক আপনার যত্ন চায়, আপনার মনও চায় একটু প্রশান্তি।

ত্বকে একটু শীতলতা আনুন
আপনি জানেন কি, ডাবের পানি দিয়ে বানানো আইস রোলার গরমে ত্বকের জন্য যেন স্বর্গীয় স্পর্শ? প্রতিদিন সকালে বা বিকেলে আইস রোলার মুখে ব্যবহার করুন। ত্বক হবে সতেজ, রোমকূপ থাকবে সঙ্কুচিত, আর ক্লান্তিও হবে অনেকটাই দূর।
পানি খান, শরীর আর ত্বক দুইই বাঁচান
আপনার শরীরের ভেতরটা যদি ঠান্ডা না থাকে, বাইরে ত্বক কিছুতেই ভালো থাকবে না। তাই দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। সঙ্গে খেতে পারেন শসা, তরমুজ, কমলালেবু—যে ফলগুলো শরীরকে ঠান্ডা রাখে এবং ভেতর থেকে ত্বককে উজ্জ্বল করে।
শুষ্ক ত্বকের জন্য অ্যালোভেরা ও গোলাপ জল
গরমে অনেকের ত্বক এমন শুষ্ক হয়ে যায় যে চামড়া উঠতে শুরু করে। এই অবস্থায় কেমিক্যাল জাতীয় কিছু ব্যবহার না করে বরং অ্যালোভেরা জেল বা ঠান্ডা গোলাপ জল ব্যবহার করুন। ত্বকে আরাম আসবে, এবং ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বজায় থাকবে।
তৈলাক্ত ত্বকে বরফের জাদু
আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয়, তাহলে দিনের শুরুটা করুন বরফ দিয়ে। একটি বড় বোলে বরফ নিয়ে তাতে মুখ ডুবিয়ে রাখুন ১০ সেকেন্ড করে ৫-৬ বার। এতে ত্বকের ছিদ্রগুলো সঙ্কুচিত হবে, অতিরিক্ত তেল বের হওয়া কমবে, আর আপনি পাবেন টানটান উজ্জ্বল একটা মুখ।
সূর্যের সঙ্গে যুদ্ধ নয়, বুদ্ধিমত্তা
সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত যদি বের হওয়া একান্ত প্রয়োজন হয়, তাহলে সঙ্গে রাখুন ছাতা, রোদচশমা, পানির বোতল, সানস্ক্রিন, রুমাল আর একটি ছোট হ্যান্ডফ্যান। এই সামান্য জিনিসগুলোই আপনাকে গরমের ভয়াবহতা থেকে অনেকটাই রক্ষা করতে পারে।
মধু নয়, শসা–মুলতানি মাটির ছোঁয়া দিন
অনেকে ভাবেন মধু ভালো। কিন্তু এই গরমে মধু ত্বককে আরও গরম করে দিতে পারে। বরং ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা শসা ঘষে ত্বকে লাগান, বা মুলতানি মাটি ও গোলাপ জল মিশিয়ে ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করুন। ত্বক ঠান্ডা থাকবে এবং জ্বালাভাব কমবে।
ভিতর থেকে প্রশান্তি আনুন

আপনার শরীর যদি ভেতর থেকে পরিষ্কার না থাকে, বাইরের যত্ন বৃথা। দুপুরে ঠান্ডা টক দই, পুদিনা, ধনে পাতা আর এক চিমটে পিঙ্ক সল্ট দিয়ে শরবত বানিয়ে খান। এ এক দুর্দান্ত ডিটক্স ড্রিংক—ত্বকও ভালো থাকবে, মনও।
শেষ কথা:
গরমকে আপনি বদলাতে পারবেন না। কিন্তু নিজের যত্ন নেওয়ার সিদ্ধান্তটা কিন্তু আপনার হাতেই। একটু পানি, একটু শসা, একটু বরফ আর অনেকটা সচেতনতা—এই ছোট ছোট যত্নই আপনার ত্বককে এনে দেবে প্রশান্তি। আজ থেকে শুরু হোক নিজেকে ভালোবাসা, নিজের ত্বকের যত্ন নেওয়ার নতুন গল্প।